ক্লাউড কম্পিউটিং কি (cloud computing Bengali)
‘ক্লাউড কম্পিউটিং‘ মানে কি মেঘ ও কম্পিউটারের সম্পর্কিত কিছু ? নাকি অন্য কিছু ?
ক্লাউড কম্পিউটিং মানে হলো আপনার দরকারে টাকার বিনিময়ে কোনো ডিজিটাল সার্ভিস ভাড়া করা ।
ধরুন আপনার একটি কোম্পনি আছে। আপনার কোম্পানির কাস্টমারের এত যে ডিজিটাল ডাটা সেগুলো কোথায় সেভ করবেন?
আপনি আপনার হার্ডডিস্কে সেভ করবেন না কারণ একটা সময় সময় হার্ড ডিস্ক ভর্তি হয়ে যাবে বা হার্ড ডিস্ক নষ্ট হয়ে গেলে মুশকিল। তাহলে আপনার এত এতো ডাটা সুরক্ষিত ভাবে কোথায় সেভ রাখবেন ?
এখানেই সামনে আসে ক্লাউড কম্পিউটিং। কিছু ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানি থাকে যার কিছু টাকার বিনিময়ে আপনাকে সার্ভিস প্রদান করে যাতে আপনি অনেক সুবিধা পাবেন।
ডাটা সেভ করতে পারবেন ও দরকার পড়লে আপনার কোম্পানির প্রত্যেকটা লোক এক্সেস করতেও পারবে
সুরক্ষিত থাকবে ,খরচ অনেক কম পড়বে,আপনার কোম্পানির প্রত্যেকটা কম্পিউটারে access করতেও পারবেন।
ক্লাউড কম্পিউটিং কি ?(cloud computing bangla )
ক্লাউড কম্পিউটিং হলো টাকার বিনিময়ে কিছু সেবা যেটা কোনো ক্লাউড কম্পিউটিং কোম্পানি তার ক্রেতা কোম্পানিকে প্রদান করে।
যার মধ্যে আপনি ইন্টারনেট এক্সেস এর মাধমে ডাটা স্টোরে করতে পারবেন ,সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার ভাড়া করতে পারবেন,ম্যাসেজের সুবিধা বা অন্য যে কোনো ধরণের সুবিধা পাবেন।
নামকরণ (nomenclature)
দূর থেকে আমরা মেঘকে দেখতে পাই ,আর এর আউটপুট হিসাবে আমরা নিচে বসে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পাই ।
একইভাবে cloud computing systemকে যদি তুলনা করি তাহলে যে কোম্পানির সেবা প্রদান করে তারা একটি জটিল পদ্ধতিতে তাদের কাজটি সম্পূর্ণ করে।
আর আমরা যারা ভাড়া করি তারা বাইরে থেকে ওই জটিল কাজগুলিকে নিজেদের সুবিধার্থে একটি মেঘ ভেবে কাজ করি বহু আগে থেকেই।
আর আমরা নিজেদের এক্সেস কম্পিউটারে কানেকশনগুলি মেঘের সাথে তারের মতো দেখে থাকি। যাতে আমরা আউটপুট পাই।
উদাহরণ (example) –
ক্লাউড কম্পিউটিং এর উদাহরণ হিসাবে ,আমরা অনেকেই google photosতে ছবি সেভ রাখি এর জন্য দরকার হয় একটি জিমেইল একাউন্টের।
এখন ওই যে ছবিগুলো আমরা সেভ করে রাখলাম আমরা চাইলে ইমেইল আর পাসওয়ার্ড দিয়ে যেকোনো ডিভাইস থেকে ছবিগুলো পেতে পারি।
আবার ফোন থেকে ডিলিট হলেও পেয়ে যাবো ,গুগলের সুরক্ষা ও রয়েছে। এখন যদি দেখি এটিও ক্লাউড কম্পিউটিং-এর একটি প্রকার যার main কাজ storage service ।
সুবিধা (advantages of cloud computing)
- Metered Service -আপনি যেটুকু ব্যবহার করবেন তার জন্য আপনাকে টাকা দিতে হবে।তার বাইরে আপনাকে পে করতে হবেনা।
- Security -আজকালকার দিনে সিকিউরিটি সত্যি একটা বড় ইস্যু। সেখানে দাঁড়িয়ে আপনি প্রোভাইডার কোম্পানি থেকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা পাবেন।
- Auto-Upgradable – ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে সফটওয়্যার গুলো আপনাকে আপডেট করার দরকার নেই ,এগুলো অটোমেটিক আপডেট হবে।
- Operating cost –ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে আপনার খরচ হবে নূন্যতম । আপনি অনেক সফটওয়্যার কম টাকায় ভাড়া পাবেন ,এছাড়া পুরো একটি কম্পিউটার ও ভাড়া করতে পারবেন অনেক কম টাকায় ।
- Data Lost – আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডাটা গুলো নিজের কম্পিউটার থেকে কোনো কারণে নষ্ট হয়ে গেলেও এখান থেকে ডাটা লস্ট হওয়ার সম্ভবনা প্রায় শুন্য বলা চলে।
- Any Time-Any Where – ক্লাউড কম্পিউটিং-র সবচেয়ে বড় advantage হলো যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। আপনার কাছে ইন্টারনেট ও ডিভাইস থাকলেই হলো ।
- Start Up Cost – আপনার স্টার্টআপেও ক্লাউড কম্পিউটিং বেশি preferable ,কারণ পরে আপনার ব্যবসা লস হয়ে গেলে আপনি যেকোনো মুহূর্তে service বন্ধ করতে পারবেন।
কিন্তু কোম্পনির কাজে প্রচুর কম্পিউটার বা কিছু যদি কিনে নেন ও পরে আপনার ব্যবসা লস হয়ে গেলে তা ফেরানো মুশকিল ।
অসুবিধা (disadvantages of cloud computing)
- Internet Connection – এক্ষেত্রে আপনার stable internet connection থাকা প্রয়োজন ,যাতে আপনি সহজে কাজ করতে পারেন।
- Data Location – এক্ষেত্রে আপনি জানতে পারবেন না আপনার Data র Location কোথায় ,কোন জায়গায় আপনার ডাটা সংরক্ষিত আছে।
- Uncontrolled Process -এক্ষেত্রে আপনার কাজটি ক্লাউড সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে আপনার কন্ট্রোল ছাড়াই প্রসেস করা হয় ।প্রসেস করা ব্যাপারটি আপনার control এ থাকবেনা।
- Security – একটা দেশের ক্ষেত্রে তার নিরাপত্তার খাতিরে সরকারি ডাটা খুবই sensitive একটি বিষয়। এক্ষেত্রে তা কোনো বৈদেশিক কোম্পানির ক্লাউডে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ।
ক্লাউড কম্পিউটিং কত প্রকার (types of cloud computing)
cloud computing কত প্রকার এটি বুঝতে গেলে আপনাকে কিছু বেসিক ধারণা রাখতে হবে।
Cloud computing কাজ করে মূলত দুই ভাবে তারা কিছু সার্ভিস প্রদান করে সেই সার্ভিসের ভিত্তিতে তাদের ভাগ করা যায় ।
আবার পুরো cloud computing model টি যেভাবে কাজ করে সেইভাবেও ভাগ করা যায় ।
ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস (types of cloud computing service)
তারা একটি কোম্পানিকে কি কি সার্ভিসে দিচ্ছে যেমন – স্টোরেজ বা নেটওয়ার্ক সেবা বা সফটওয়্যার সেবা এসবের উপর ভিত্তি করে এদের অনেকগুলি ভাগে ভাগ করা হয় ।
পুরো ভাগগুলো বুঝতে গেলে আপনাকে ধারণা করতে হবে আপনার পিসি কেনা থেকে কোনো সফটওয়্যার এ কাজ করা অবধি।
মানে আপনাকে পর পর করতে হয় PC কেনা ,windows install ,software install ,তারপর কাজ।
এক্ষেত্রে সব কিছুই হয় হাতের সামনে অর্থাৎ ফিজিক্যালি। কিন্তু ,কম্পিউটিংয়ে পুরোটাই হবে virtual ।
Infrasturucture as a Service(IaaS)
এক্ষেত্রে কি হয় আপনি যার কাছ থেকে সার্ভিস কেনেন সে আপনাকে পুরো কাঠামোটাই দেয় ,মানে ধরে নিন PC দেয় বা একটি Virtual Machine দেয়
এবার আপনাকে নিজে থেকে windows install থেকে শুরু করে software install সব কিছুই করতে হবে।
উদাহরণ (example) –
EC2 বা Amazon Elastic Compute Cloud একটি IaaS ধরনে সার্ভিস । এখানে আপনি virtual mechine ভাড়া নিতে পারবেন।
Platform as a service (PaaS)
এক্ষেত্রে আপনাকে সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি শুধু প্লাটফর্মটি ভাড়া দেয় । মানে সহজ ভাষায় ধরে নিন উইন্ডোস বা অপারেটিং সিস্টেম দেয় যাতে আপনি software install করতে পারেন ।
বা, ধরুন যারা app বানায় তাদের বানানোর পরিবেশ বা Application Programming Interface (API) ভাড়া দিয়ে থাকে যাতে তারা app বানাতে পারে।
উদাহরণ (example) – Google এর App Engine ও Microsoft এর Azure এর PaaS সার্ভিসের উদাহরণ ।
Software as a Service(SaaS)
এই সার্ভিসে আপনি একটি particular সফটওয়্যার বা application ভাড়া পাবেন যেখানে আপনি আপনার নির্দিষ্ট কাজটি করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে সফটওয়্যারটির বাকি কিছু যেমন -স্টোরেজ, configuration বা maintenance নিয়ে ভাবার দরকার পড়েনা।
উদাহরণ (example) –
Google Docs আপনাকে মাইক্রোসফট অফিসের সমস্ত সুবিধা প্রদান করে ,যেখানে document, spreadsheet, presentation এর মতো সুবিধা পেয়ে থাকেন।
Storage as a service (STaaS)
নিশ্চয় বুঝতে পারছেন এখানে কোনো কিছু ডাটা হিসাবে স্টোর করার সুবিধা দেওয়া হয়।
উদাহরণ (example) –
Google Photos আপনাকে photo store করার সুবিধা প্রধান করে ক্লাউড স্টোরেজ হিসাবে, Google Drive পুরোপুরি cloud storage হিসাবে কাজ করে ,যেখানে file store করার সুবিধা পাওয়া যায়।
Network as a Service(NaaS)
এখানে আপনি network infrastructure খুব securely ব্যবহার করতে পারবেন।
উদাহরণ (example) –
VPN বা Virtual Private Network এই ধরনের cloud computing service এর উদাহরণ ।
ক্লাউড কম্পিউটিং মডেল (models of cloud computing service)
মডেল অনুযায়ী ক্লাউড কম্পিউটিংকে 4 ভাগে ভাগ করা যায়।
Public cloud
এটির সার্ভিস যেকোনো ব্যাক্তি নিতে পারে ,অর্থাৎ public এর জন্য এটি বানানো হয়েছে।এখানে পাবলিক যেকোনো স্টোরেজ ,অ্যাপ্লিকেশনস বা অন্যান্য রিসোর্স প্রায় বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়
Features –
- এখানে খরচ তুলনামূলক কম বা বিনামূল্যে হয় ।
- এখানে নিরাপত্তা অনেকটাই কম থাকে অনেকজন ব্যবহার করে বলে।
Private cloud
এই model অনুযায়ী একটি কোম্পানি তার personal কাজের জন্য নিজের ব্যাবস্থায় বা অন্য কোম্পানি থেকে ভাড়া করা cloud systemকে ব্যবহার করা
Features –
- অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশি খরচ পড়ে যেতে পারে
- বড় কোম্পানি একটি পুরো ক্লাউড কিনে সেগুলো প্রত্যেকটা আলাদা আলাদা কাজে ব্যবহার করলে খরচ কম পড়ে।
Community cloud
‘কমিউনিটি ‘ বলতে বোঝায় কোনো ব্যাক্তিদের সংঘবদ্ধ দল। এক্ষেত্রে কোনো organization বা কোনো ছোট বা মাঝারি company নিজেদের কাজের সুবিধার জন্য যে ক্লাউড সিস্টেম ব্যবহার করে community cloud বলে।
Features –
- এক্ষেত্রে ওই কোম্পানীতে যারা কাজ করে শুধুমাত্র তারা access করে পারে cloud system টি।
- এখন work from home এর সুবিধার্থে তারা যেকোনো জায়গায় বা বাড়িতে বসে কোম্পানির কাজ করতে পারে।
Hybrid cloud
এটি public cloud, community cloud ও private cloud এর মিশ্রনে তৈরী হয়। এ ধরণের ক্লাউড বিভিন্ন specific কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
কোনো ব্যাঙ্ক তাদের ক্লাউড স্টোরেজের মধ্যে যেগুলো তাদের customer এর প্রাইভেট ডাটা সেগুলো তাদের private cloud ও সাধারণ ডাটা গুলো public cloud এ রাখলে পুরো ক্লাউড স্টোরেজটিকে একটি hybrid cloud বলা হবে।
এছাড়া আরো কয়েকটি cloud model রয়েছে যেমন – distributed-cloud , multi-cloud ,inter-cloud ।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের ব্যবহার(use of cloud computing)
- Google বিভিন্ন কাজে যেমন – google photos, gmail, google drive, google documents প্রায় সব জায়গাতেই ক্লাউড কম্পিউটিং এর ব্যবহার করছে।
- 2006 সাল থেকে যাত্রা শুরুর পর থেকেই amazon cloud service পরিষেবা দিয়ে চলেছে। বর্তমানে অ্যামাজন ক্লাউড সার্ভিস খুবই বিখ্যাত তার পরিষেবার জন্য
এমনকি টুইটার যখন প্রথম শুরু হয় এটি amazon cloud service ব্যবহার করত
- বর্তমানে মাইক্রোসফট আইবিএম প্রভৃতি কোম্পানিও ক্লাউড সার্ভিস পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত রয়েছে
- গুগলের একটি নিজস্ব ক্লাউড সার্ভিস রয়েছে যা google clouds নামে পরিচিত ।
ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস প্রোভাইডার(service provider)
DropBox
এটিকে আপনি এক ধরনের ভারচুয়াল হার্ডডিস্ক বলতে পারেন । এটিতে খুব সহজে আপনার পিসি থেকে ফাইলগুলি কন্ট্রোল করতে পারবেন।
Evernote
Note কন্ট্রোল করার জন্য এবং যেকোনো স্থানে তা ব্যবহার করার জন্য evernote এর সার্ভিস ব্যবহার করা হয়।
Outright
ছোট বিজনেসের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ finance applications হলো outright যেখানে আপনি busniess profit, loss ইত্যাদি হিসাব করতে পারবেন ।
Box.net
এটিও একটি ভালো ক্লাউড সার্ভিস পরিষেবা দেওয়া কোম্পানি যার মাধ্যমে আপনি যখন খুশি যেখানে দরকার ফাইলে কাজ করতে পারবেন।
সর্বোপরী ,
সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং এর ভবিষ্যত কতটা উজ্জ্বল। কিন্তু মাথায় রাখার মতো বিষয় ও কিছু রয়েছে।
ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে সুবিধা যেমন রয়েছে অসুবিধাও রয়েছে।
সবকিছু নিয়েই ভাবতে হবে আমরা নিজেদের ডাটা কোনো কোম্পানির হাতে দিচ্ছি তাই data breach বা private data প্রকাশ পাওয়ার ঘটনা যাতে না ঘটে।
আমাদের সবচেয়ে আগে সেই কোম্পানির privacy policy ভালো করে দেখে নেওয়া উচিত ।